বাংলাদেশের কৃষি গবেষণার একটি প্রধান অঙ্গ হচ্ছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, যা দেশের প্রধান খাদ্য ধান উৎপাদন ও জাত উন্নয়নে কাজ করছে। ঢাকা থেকে ৩৬ কিলোমিটার উত্তরে জয়দেবপুরে ১৯৭০ সালের ১ অক্টোবর পূর্ব পাকিস্তান ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট হিসেবে এর যাত্রা শুরু । ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর এ প্রতিষ্ঠানের নতুন নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, যা বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট অ্যাক্ট, ১৯৭৩ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত। এ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (সংশোধনী) অ্যাক্ট, ১৯৯৬ অনুযায়ী একটি বোর্ড অব ম্যানেজমেন্ট দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। মহাপরিচালক এ বোর্ডের চেয়ারম্যান, যিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী। এ প্রতিষ্ঠানের ১৯টি গবেষণা বিভাগ, তিনটি সাধারণ সেবা এবং আটটি প্রশাসনিক শাখা রয়েছে। এখানে ৩০৮ জন বিজ্ঞানী/কৃষি প্রকৌশলী/ কর্মকর্তা সহ মোট জনবল রয়েছে ৭৮৬ জন। বিজ্ঞানীদের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এমএস এবং পিএইচডিসহ উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ।
ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের পরিবেশে বৈচিত্র্য রয়েছে । দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এলাকা খরাপ্রবণ, মধ্যবর্তী এলাকা বন্যাপ্রবণ এবং উপকূলীয় দক্ষিণাঞ্চল লবণাক্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত। বৈচিত্র্য অনুসারে তিনটি প্রধান কৃষিভিত্তিক অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে মূলত জমি, মাটি আবহাওয়া এবং জলবায়ুর তারতম্যের ভিত্তিতে। এ বৈচিত্র্য ধান উৎপাদনে ব্রি’র বিজ্ঞানীদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। নতুন ধান জাত উদ্ভাবনের গবেষক এবং উৎপাদন প্রকৌশলীরা এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্রি সদর দপ্তরে কাজ করছে। এ কারণে দেশের কুমিল্লা, হবিগঞ্জ, ফেনীর সোনাগাজী, ফরিদপুরের ভাঙ্গা, বরিশাল, রাজশাহী, রংপুর, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, সিরাজগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, দিনাজপুর, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, সুনামগঞ্জ, কক্সবাজার এবং খাগড়াছড়িতে আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
এ প্রতিষ্ঠানে আধুনিক গবেষণার সকল সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। রয়েছে গবেষণাগার, গ্রিন হাউজ, এবং পরীক্ষণ মাঠ। ব্রি'র রয়েছে একটি আধুনিক জার্মপ্লাজম ব্যাংক, ২০টি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাগার, দশটি গ্রিন হাউজ, দশটি নেট হাউজ এবং ৭৬.৮৩ একর পরীক্ষণ মাঠ (সদর দপ্তরে)। এছাড়া আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোতে আধুনিক গবেষণা সুবিধা, বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ে গবেষণার সুযোগ রয়েছে নতুন প্রতিষ্ঠিত কেন্দ্র কুষ্টিয়া এবং সাতক্ষীরায়।
১ |
|