কৌলিসম্পদ ও বীজ বিভাগ ব্রি’র জাত উদ্ভাবন প্রোগ্রাম এরিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই বিভাগের ম্যান্ডেট হলো ধানের জাত উদ্ভাবন, জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা এবং সীড টেকনোলজি রিসার্চ। জার্মপ্লাজম ম্যানেজমেন্ট এই বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ যা যেকোনো গবেষণার মূল উপাত্ত। এছাড়াও এই বিভাগ মানসম্মত ব্রিডার বীজ উৎপাদনের মাধ্যমে ব্রি’র এপিএ অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। এই বিভাগের উল্লেখযোগ্য অর্জনগূলো নিম্নরুপঃ
১. এই বিভাগ হতে একটি সুগন্ধী ধানের জাত (খাসকানি নামক জার্মপ্লাজম থেকে ব্রি ধান ৩৪) অবমুক্ত করা হয়েছে।
২. ২০০৭ সালে দীর্ঘমেয়াদি জিনব্যাংক (২০০০ সিএফটি ভলিউম) স্থাপন করা হয়। যাতে প্রায় ২২,০০০টি জার্মপ্লাজম প্যাকেট ৫০-১০০ বছর সংরক্ষণ করার সুবিধা রয়েছে।
৩. জিআরএস বিভাগের জিনব্যাংকে ৯,০০৬ (নয় হাজার) টি এর অধিক জার্মপ্লাজম স্বল্প মেয়াদ, মধ্যম মেয়াদ এবং দীর্ঘ মেয়াদে সংরক্ষিত আছে।
৪. এক হাজার দুই শত এর বেশী জাত বিভিন্ন বায়োটিক এবং এবায়োটিক ফ্যাক্টরের বিপরীতে মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং এখান থেকে ৫৭২টি জার্মপ্লাজম বিভিন্ন রোগ ও পোকামাকড়ে মধ্যম থেকে অতিমাত্রায় প্রতিরোধী এবং ৪০৮টি জার্মপ্লাজম বিভিন্ন এবায়োটিক ফ্যাক্টরে সহনশীল হিসাবে সনাক্ত করা হয়েছে।
৫. প্রায় ১,৬৬৪ (এক হাজার ছয়শত চৌষট্টি) টি বিদেশী (exotic) ইন্ডিকা ও ১১১ (এক শত এগার) টি জাপোনিকা ধানের জাত সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ করা হয়েছে।
৬. প্রায় ৯০টি বন্য (wild) ধানের জার্মপ্লাজম ব্রি তে এক্স সিটু ফিল্ড জীনব্যাংক হিসেবে সংরক্ষিত আছে।
৭. ব্রি সদর দপ্তরে ৩০০টি এর অধিক দেশী ধানের জাত সংকরায়ন প্রোগ্রামে প্যারেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এবং ১৮টি আধুনিক ধানের জাত, দেশী জাতকে প্যারেন্ট হিসেবে ব্যবহার করে উদ্ভাবিত হয়েছে (বিআর৩, বিআর৫, বিআর২২, বিআর২৩, বিআর২৫, ব্রি ধান২৮, ব্রি ধান৩১, ব্রি ধান৩৪, ব্রি ধান৩৭, ব্রি ধান৩৮, ব্রি ধান৪৬, ব্রি ধান৬২, ব্রি ধান৮১, ব্রি ধান৮২, ব্রি ধান৮৭, ব্রি ধান৮৯, ব্রি ধান৯৬, ব্রি ধান১০৩ ও এর মধ্যে বিআর৫ এবং ব্রিধান৩৪ দেশী ধানের জাত থেকে সরাসরি বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উদ্ভাবিত হয়েছে)।
৮. এ পর্যন্ত প্রায় ১৫০০টি ধানের জার্মপ্লাজম SSR Marker দ্বারা মলিকুলার লেভেলে বৈশিষ্ট্যায়ন করা হয়েছে।
৯. প্রায় ৩৮৩ (তিন শত তিরাশি) টি স্থানীয় জাতের ধানের জার্মপ্লাজম এক্সেশনের জিবিএস (Genotype by Sequencing) সম্পন্ন করা হয়েছে।
১০. এফএও এর গ্লোবাল প্লান অফ একশন’২০২৩ এ ব্রি জার্মপ্লাজমএর সকল তথ্য সন্নিবেশিত করা হয়েছে।
১১. এফএও এর ইন্টারন্যাশনাল ট্রীটি অন প্লান্ট জেনেটিক রিসোর্সেস ফর ফুড এন্ড এগ্রিকালচার এর ১৭ নং আর্টিক্যাল অনুসারে গ্লোবাল ইনফরমেশন সিস্টেমে ১০৭টি জার্মপ্লাজম ডিওআই নম্বর সহযোগে রেজিস্ট্রেশন করে ব্রি জীনব্যংক সমগ্র বাংলাদেশে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছে ।
১২. জিআরএস বিভাগের মাধ্যমে একটি টেকসই ধানবীজ নেট ওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে যা বিভিন্ন বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে ভিত্তি বীজ উৎপাদন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখছে।
১৩. প্রতিবছর নিউক্লিয়াস বীজসহ ১১০টি ব্রি উদ্ভাবিত (ব্রি ধান১০৮ পর্যন্ত) এবং ২২টি ব্রি প্রস্তাবিত ধানের জাত রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
১৪. প্রতিবছর প্রায় একশত পঞ্চাশ টনের অধিক ব্রি উদ্ভাবিত জাত সমূহের ব্রিডার বীজ বিএডিসিসহ প্রায় ১০০০ সীডনেট পার্টনারকে সরবরাহ করা হয়। আর এভাবেই এই বিভাগ সরাসরি ক্ষুধা মুক্তি এবং খাদ্য নিরাপত্তায় ভুমিকা রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) অর্জনে সহায়তা করছে।
১৫. জিআরএস বিভাগের বিজ্ঞানীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০২০ সালের নভেম্বরে Department of Patents, Designs and Trade Marks হতে বাংলাদেশের কালিজিরা এবং কাটারিভোগ ধান যথাক্রমে বাংলাদেশ কালিজিরা এবং দিনাজপুর কাটারিভোগ নামে বাংলাদেশের ভৌগলিক নির্দেশক পন্য হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে।