Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪

ব্রি'র সম্পর্কে

এক নজরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)
 
পরিচিতি
বাংলাদেশে ধান গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের প্রধান কেন্দ্র ও পথিকৃৎ হিসেবে দেশে-বিদেশে সুপরিচিত প্রতিষ্ঠানটি ১৯৭০ সালের ১লা অক্টোবর যাত্রা শুরু করে, এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সংসদীয় আইন ১০, ১৯৭৩ (Parliamentary Act X, 1973)-এর বলে “বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)” নাম ধারণ করে। রাজধানী ঢাকা থেকে ৩৬ কিলোমিটার উত্তরে জয়দেবপুরে অবস্হিত ব্রি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা এবং বাংলাদেশের জাতীয় কৃষি গবেষণা সিস্টেম (NARS)-এর একটি অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। বর্তমানে ব্রি সংসদীয় আইন ১৯, ২০১৭ (Parliamentary Act X) মোতাবেক পরিচালিত হচ্ছে। মহাপরিচালক হচ্ছেন ব্রি-র সংস্থা প্রধান। তাঁর নেতৃত্বে একটি ১৩ সদস্যবিশিষ্ট ব্যবস্থাপনা বোর্ড (Board of Management) ব্রি-র সার্বিক নীতি নির্ধারণ ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে। প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠানটি ১১টি গবেষণা বিভাগ ও ৩টি আঞ্চলিক কার্যালয় নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। সময়ের সাথে সাথে দ্রুত আধুনিক উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ধানের জাত ও উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তা ও কাজের গুণগত ও পরিমাণগত পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন গবেষণা বিভাগ ও আঞ্চলিক কার্যালয় স্হাপন ও গবেষণা সুযোগ-সুবিধাদি সম্প্রসারণ করা হয়। বর্তমানে ব্রি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১৯টি গবেষণা বিভাগ ও দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কৃষি-পরিবেশ অঞ্চলে স্থাপিত মোট ১৭টি আঞ্চলিক কার্যালয়, ৬টি স্যাটেলাইট স্টেশনের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সকল গবেষণা কর্মকান্ড পরিচালনা করে ৮টি বহু বিষয়ভিত্তিক প্রোগ্রাম এরিয়ার (multidisciplinary program area) মাধ্যমে। ইনস্টিটিউটে এখন ৩০৮ জন বিজ্ঞানীসহ ৭৮৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন।
 
রূপকল্প
আধুনিক উফশী ধানের জাত ও উন্নততর, নিরাপদ ও লাভজনক উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশে টেকসই খাদ্যনিরাপত্তা অর্জন।
 
উদ্দেশ্য ও অভিলক্ষ্য
ব্রি-র প্রধান উদ্দেশ্য ও অভিলক্ষ্য হচ্ছে: টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ধানভিত্তিক প্রযুক্তিসমূহের নিরন্তর উন্নয়ন। বর্তমানের সমস্যাসমূহ সমাধানকল্পে ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চারটি প্রধান লক্ষ্য সামনে রেখে ব্রি-র সকল গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হয়: কৃষকবান্ধব টেকসই ধানের জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন, প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবস্হাপনার মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জীববৈচিত্র্য অক্ষুন্ন রাখা, প্রাগ্রসর গবেষণার মাধ্যমে নতুন ও উন্নততর, ক্রমহ্রাসমান সম্পদসাপেক্ষ জলবায়ুবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর ও গ্রহণ ত্বরান্বিতকরণ।
 
কর্মসম্পাদনের ক্ষেত্রসমূহ
  • ধানের উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি
  • ধানের ব্রিডার বীজের সহজলভ্যতা ও সরবরাহ বৃদ্ধিকরণ
  • কর্ম ব্যবস্থাপনায় পেশাদারিত্বের উন্নয়ন
সুশাসন ও সংস্কারমূলক কর্মসম্পাদনের ক্ষেত্র
  • সুশাসন ও সংস্কারমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন জোরদারকরণ
 
কার্যাবলী
  • ধানের উচ্চফলনশীল জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন
  • লবণাক্ততা, খরা, ঠান্ডা, তাপ, জলাবদ্ধতা, জলমগ্নতা, বালাই সহিষ্ণুসহ বিভিন্ন ঘাতসহিষ্ণু ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন
  • কৃষকের নিকট উদ্ভাবিত ধানের জাত ও প্রযুক্তির সম্প্রসারণে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান
  • কৃষি বিষয়ে ই-তথ্য সেবা প্রদান
  • উদ্ভাবিত ধানের জাত ও প্রযুক্তি কৃষক পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য প্রকাশনা সম্পাদন
  • ধানের ব্রিডার ও মানঘোষিত বীজ (certified seed) উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ
  • লবণাক্ততা, খরা, ঠান্ডা, তাপ, জলাবদ্ধতা, জলমগ্নতা, বালাইসহিষ্ণুসহ বিভিন্ন ঘাতসহিষ্ণু ধানের ব্রিডার ও মানঘোষিত বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ
  • কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন/উন্নয়ন
  • মুজিববর্ষ উদযাপনে বিশেষ কর্মসূচি যেমন কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে ধানের বীজ বিতরণ, প্রদর্শনী স্থাপন ও বৃক্ষরোপণসহ অন্যান্য বিশেষ কার্যক্রম সম্পাদন
  • প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা
 
গবেষণা কার্যক্রম
প্রাথমিক পর্যায়ে গবেষণা প্রস্তাব অগ্রাধিকার যাচাইয়ের কাজ টাস্কফোর্স এর মাধ্যমে করা হলেও বর্তমানে ব্রি ১৯টি বিভাগ ও ১৭টি আঞ্চলিক কার্যালয়কে ৮টি প্রোগ্রাম এরিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এই আটটি গবেষণা প্রোগ্রাম এরিয়া হলো:
 
১। জাত উন্নয়ন  (Varietal Development)
২।  শস্য-মাটি-পানি ব্যবস্থাপনা  (Crop-Soil-Water Management)
৩। বালাই ব্যবস্থাপনা (Pest Management)
৪।  রাইস ফার্মিং সিস্টেমস  (Rice Farming Systems)
৫।  আর্থ-সামাজিক ও নীতি প্রণয়ন  (Socio-Economic and Policy)
৬।  খামার যান্ত্রিকীকরণ  (Farm Mechanization)
৭। প্রযুক্তি হস্তান্তর  (Technology Transfer)
৮। আঞ্চলিক কার্যালয়  (Regional Stations)
 
উল্লেখযোগ্য অর্জনসমূহ
  • বিগত ৫০ বছরে ব্রি মোট ১১৫টি উচ্চ ফলনশীল আধুনিক ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে, যার ১০৭টি ইনব্রিড ও ৮টি হাইব্রিড জাত; এর মধ্যে লবণাক্ততা সহনশীল ১০টি জাত, রোপা আমন মওসুমে খরা সহনশীল ৪টি জাত, জলামগ্নতা সহনশীল ৫টি জাত, পুষ্টিসমৃদ্ধ ৬টি জাত এবং রপ্তানীযোগ্য ৪টি জাত অন্তর্ভুক্ত; অপেক্ষাকৃত নতুন, সাম্প্রতিক সময়ে (২০০৯ থেকে ২০২৪) উদ্ভাবিত ৬৪টি ধানের জাতের নাম ও বৈশিষ্ট নীচের সারণিতে উপস্হাপন করা হলো:
 
ক্রমিক নং
জাতের নাম
মওসুম
জাতের বৈশিষ্ট
১.
ব্রি ধান৫১
আমন
১৪ দিন পর্যন্ত জলমগ্নতা সহনশীল
২.

ব্রি ধান৫২

আমন
১৪ দিন পর্যন্ত জলমগ্নতা সহনশীল
৩.
ব্রি ধান৫৩
আমন
লবণাক্ততা সহনশীল
৪.
ব্রি ধান৫৪
আমন
লবণাক্ততা সহনশীল
৫.
ব্রি ধান৫৫
বোরো
লবণ, খরা ও ঠান্ডা সহনশীল
৬.
ব্রি ধান৫৬
আমন
খরা সহনশীল
৭.
ব্রি ধান৫৭
আমন
খরা সহনশীল
৮.
ব্রি ধান৫৮
বোরো
দানা চিকন
৯.
ব্রি ধান৫৯
বোরো
দানা মাঝারি মোটা
১০.
ব্রি ধান৬০
বোরো
চাল সরু
১১.
ব্রি ধান৬১
বোরো
লবণাক্ততা সহনশীল
১২.
ব্রি ধান৬২
আমন
জিঙ্কসমৃদ্ধ
১৩.
ব্রি ধান৬৩
বোরো
চাল বাসমতির মত চিকন
১৪.
ব্রি ধান৬৪
বোরো
জিঙ্ক সমৃদ্ধ
১৫.
ব্রি ধান৬৫
বোনা আউশ
খরা সহনশীল
১৬.
ব্রি ধান৬৬
আমন
উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ
১৭.
ব্রি ধান৬৭
বোরো
লবণাক্ততা সহনশীল
১৮.
ব্রি ধান৬৮
বোরো
চাল মাঝারি মোটা
১৯.
ব্রি ধান৬৯
বোরো
সার সাশ্রয়ী জাত
২০.
ব্রি ধান৭০
আমন
চাল লম্বা, চিকন ও সুগন্ধি
২১.
ব্রি ধান৭১
আমন
খরা সহনশীল
২২.
ব্রি ধান৭২
আমন
জিঙ্কসমৃদ্ধ জাত
২৩.
ব্রি ধান৭৩
আমন
লবণাক্ততা সহনশীল
২৪.
ব্রি ধান৭৪
বোরো
জিঙ্কসমৃদ্ধ জাত
২৫.
ব্রি ধান৭৫
আমন
স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন
২৬.
ব্রি ধান৭৬
আমন
অলবণাক্ত জোয়ার-ভাটা অঞ্চলের উপযোগী
২৭.
ব্রি ধান৭৭
আমন
অলবণাক্ত জোয়ার-ভাটা অঞ্চলের উপযোগী
২৮.
ব্রি ধান৭৮
আমন
জলমগ্নতা ও লবণাক্ততা সহনশীল 
২৯.
ব্রি ধান৭৯
আমন
২১ দিন পর্যন্ত জলমগ্নতা সহনশীল
৩০.
ব্রি ধান৮০
আমন
চাল সরু, সুগন্ধী ও রপ্তানীযোগ্য
৩১.
ব্রি ধান৮১
বোরো
চাল লম্বা, চিকন ও রপ্তানীযোগ্য
৩২.
ব্রি ধান৮২
রোপা আউশ
চাল মাঝারি মোটা ও রং সাদা।
৩৩.
ব্রি ধান৮৩
বোনা আউশ
চাল মাঝারি মোটা ও রং সাদা।
৩৪.
ব্রি ধান৮৪
বোরো
উচ্চফলনশীল জিঙ্কসমৃদ্ধ জাত।
চাল লম্বা ও চিকন এবং রং লালচে বাদামি।
৩৫.
ব্রি ধান৮৫
রোপা আউশ
চাল লম্বা ও মাঝারি চিকন এবং রং সাদা।
৩৬
ব্রি ধান৮৬
বোরো
জৈব প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উদ্ভাবিত। চাল লম্বা ও চিকন এবং রং সাদা। ভাত ঝরঝরে ও সুস্বাদু।
৩৭.
ব্রি ধান৮৭
আমন
চাল লম্বা ও চিকন।
৩৮.
ব্রি ধান৮৮
বোরো
চাল মাঝারি চিকন ও ভাত ঝরঝরে।
৩৯.
ব্রি ধান৮৯
বোরো
ভাত ঝরঝরে ও সু্স্বাদু।
৪০.
ব্রি ধান৯০
আমন
চাল খাটো, মোটা ও হালকা সুগন্ধি। উচ্চ ফলনশীল প্রিমিয়াম কোয়ালিটি জাতের চাল থেকে উন্নতমানের পোলাও, পায়েস রান্না করা যায়।
৪১.
ব্রি ধান৯১
বোনা আমন
অগভীর পানিতে চাষ উপযোগী, জলি আমন ধানের জাত। চাল মোটা ও হালকা বাদামী।
৪২.
ব্রি ধান৯২
বোরো
চাল লম্বা ও চিকন।
৪৩.
ব্রি ধান৯৩
আমন
উচ্চ ফলনশীল, স্বর্ণা জাতের ন্যায় গুণাগুণ ও অভিযোজন ক্ষমতাসম্পন্ন জাত। চাল মাঝারি মোটা ও সাদা।
৪৪.
ব্রি ধান৯৪
আমন
উচ্চ ফলনশীল, স্বর্ণা জাতের ন্যায় গুণাগুণ ও অভিযোজন ক্ষমতা সম্পন্ন জাত। চাল মাঝারি মোটা ও সাদা।
৪৫.
ব্রি ধান৯৫
আমন
উচ্চ ফলনশীল, স্বর্ণা জাতের ন্যায় গুণাগুণ ও অভিযোজন ক্ষমতা সম্পন্ন জাত। চাল মাঝারি মোটা ও সাদা।
৪৬.
ব্রি ধান৯৬
বোরো
চাল মাঝারি খাটো ও দানার রং সোনালী। ভাত ঝরঝরে ও খেতে সু্স্বাদু।
৪৭.
ব্রি ধান৯৭
বোরো
চাল মাঝারি মোটা এবং রং সাদা। ভাত ঝরঝরে।
৪৮.
ব্রি ধান৯৮
রোপা আউশ
ধানের দানার রং সোনালী। চাল লম্বা, চিকন ও সাদা। ভাত ঝরঝরে।
৪৯.
ব্রি ধান৯৯
বোরো
এ জাতের প্রধান বৈশিষ্ট্য লবণাক্ততা সহনশীলতা। ধানের রং সোনালী এবং লম্বা চিকন। চাল লম্বা চিকন এবং রং সাদা। ভাত ঝরঝরে।
৫০.
ব্রি ধান১০০
বোরো
ধানের দানার রং খড়ের মত। চাল মাঝারি চিকন ও সাদা।
৫১.
ব্রি ধান১০১
বোরো
এ জাতের প্রধান বৈশিষ্ট্র ব্যাকটেরিয়াজনিত পোড়া রোগ প্রতিরোধী। চালের আকার আকৃতি লম্বা চিকন এবং রং সাদা। ভাত ঝরঝরে ও খেতে সু্স্বাদু।
৫২.
ব্রি ধান১০২
বোরো
জিঙ্কসমৃদ্ধ জাত। ধানের দানার রং খড়ের মতো। চাল লম্বা চিকন ও সাদা।
৫৩.
ব্রি ধান১০৩
আমন
চাল লম্বা, চিকন ও উচ্চ অ্যামাইলোজ সমৃদ্ধ।
৫৪.
ব্রি ধান১০৪
বোরো
চাল লম্বা, চিকন ও সাদা এবং বাসমতি টাইপ
৫৫. ব্রি ধান১০৫ বোরো চাল মাঝারি চিকন এবং  সাদা।
৫৬. ব্রি ধান১০৬ রোপা আউশ চাল মাঝারি মোটা এবং সাদা।
৫৭. ব্রি ধান১০৭ বোরো চাল অতি লম্বা, চিকন এবং সাদা। 
৫৮. ব্রি ধান১০৮ বোরো চাল মাঝারি লম্বা ও চিকন এবং সাদা যা জিরা চালের অনুরুপ এবং ভাত ঝরঝরে।
৫৯.
ব্রি হাইব্রিড ধান৩
বোরো
আগাম জাত, চাল মাঝারি মোটা
৬০.
ব্রি হাইব্রিড ধান৪
আমন
চাল মাঝারি চিকন, স্বচ্ছ ও সাদা
৬১.
ব্রি হাইব্রিড ধান৫
বোরো
চাল মাঝারি চিকন, লম্বা ও সাদা
৬২.
ব্রি হাইব্রিড ধান৬
আমন
আমন মৌসুমের উপযোগী একটি জাত
৬৩.
ব্রি হাইব্রিড ধান৭
রোপা আউশ
চাল সরু লম্বা ও ভাত ঝরঝরে।
৬৪.
ব্রি হাইব্রিড ধান৮
বোরো
চাল লম্বা, চিকন ও ভাত ঝরঝরে।
 
  • দেশ ও বিদেশের ৮,৬০৪টিরও বেশী ধানের জার্মপ্লাজম সংগ্রহ ও সংরক্ষণ
  • প্রতি বছর ১৫০ টনের বেশি ব্রিডার বীজ উৎপাদন এবং তা বিভিন্ন জিও, এনজিও এবং প্রাইভেট সেক্টর প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ
  • মাটি, পানি, সার ব্যবস্থাপনা ও ধানের চাষাবাদ পদ্ধতি সংশ্লিষ্ট ৫০টিরও বেশি উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন
  • দেশের বিভিন্ন কৃষি-পরিবেশ অঞ্চলের জন্য কৃষিতাত্ত্বিকভাবে উপযোগী ও আর্থিকভাবে লাভজনক ৫০টি নতুন, আধুনিক ধান-ভিত্তিক শস্যক্রম উদ্ভাবন
  • দেশের কৃষকদের ব্যবহার উপযোগী ৩৪টি কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন ও উন্নয়ন
  • ধানের ৩২টি রোগ ও ২৬৬টি ক্ষতিকর পোকামাকড় সনাক্তকরণ এবং এসবের ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি উদ্ভাবন
  • ব্রি’র প্রযুক্তি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কৃষকসহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এবং বিভিন্ন সংস্থার ১,৪২,২২৯ জনেরও বেশি বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা, সম্প্রসারণ কর্মী ও কৃষককে প্রশিক্ষণ প্রদান
  • ৩১৫টি পুস্তক-পুস্তিকা ও ফোল্ডার প্রকাশ; এগুলোর মধ্যে ”আধুনিক ধানের চাষ”, ”ধান চাষের সমস্যা”, ”মাঠে ধানের রোগ নির্ণয় ও তার প্রতিকার”, ”ধান চাষীর বন্ধু”, ”ধান চাষে কৃষকের প্রাথমিক জ্ঞান”, প্রভৃতি ব্যবহারিক তথ্যসমৃদ্ধ প্রকাশনার ১১ লক্ষ কপি বিতরণ
 
গ্রামীণ অর্থনীতিতে অবদান
 
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিরবচ্ছিন্ন গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এ পর্যন্ত শতাধিক আধুনিক উফশী ধানের জাত এবং এসব চাষাবাদের জন্য উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। ব্রি-র উদ্যোগে স্হানীয় ঐতিহ্যবাহী কালিজিরা এবং কাটারিভোগ ধান বাংলাদেশের ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও নিবন্ধিত হয়েছে।​ ব্রি উদ্ভাবিত উফশী আধুনিক ধানের জাতসমূহ জনগণের প্রধান খাদ্যশস্য ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে মুখ্য ভূমিকা রেখে চলেছে। দেশের স্বাধিীনতার প্রাক্কালে, অর্থাৎ ১৯৭০-৭১ সালে, ধান উৎপাদিত হত মাত্র ১ কোটি ১০ লাখ টন, ২০২২-২০২৩ সালে এসে তা দাঁড়ায় ৩ কোটি ৯৭ লক্ষ টনে। ব্রি উদ্ভাবিত উফশী আধুনিক ধানের জাতসমূহ বর্তমানে বাংলাদেশে বোরো মওসুমে (শীতকালীন ধান) ৮২%, আউশে (গ্রীষ্মকালীন ধান) ৩৬% এবং রোপা আমনে (বর্ষাকালীন ধান) ৪৭% এলাকায় আবাদ করা হচ্ছে। দেশে মোট বার্ষিক ধান উৎপাদনের শতকরা ৯০ ভাগ আসে ব্রি উদ্ভাবিত জাত থেকে।
 
ব্রি কর্তৃক আ্ধুনিক উফশী ধান উদ্ভাবনের ফলে দেশ ও জনগণ, বিশেষ করে স্বল্প আয়ের গ্রামীণ জনগোষ্ঠি, আর্থিক দিক দিয়েও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপকৃত হয়েছে ও হচ্ছে। এই আধুনিক উফশী ধানের জাতগুলো না থাকলে দেশের মানুষের খাদ্য চাহিদা মেটাতে সরকারকে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ খাদ্য আমদানি করতে হতো। কৃষকের মাঠে ব্রি উফশী ধানের জাত ও উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি আসার পর ১৯৮০ সাল থেকে নিয়মিতভাবে খাদ্যশস্য আমদানি কমতে থাকে এবং ১৯৯৬ সাল নাগাদ দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার কাছাকাছি পৌঁছে যায়। খাদ্য আমদানি ব্যাপকভাবে হ্রাস পাওয়ায় দেশের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হয়। পক্ষান্তরে, ব্রি ধানের জাত এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন উত্তরোত্তর বৃদ্ধির ফলে অভ্যন্তরীণ বাজারে ধানের দাম স্থিতিশীল থাকে যা জনগণের জন্য আর্থিকভাবে স্বস্তিদায়ক। হিসাব করে দেখা গেছে, ধান গবেষণা ও সম্প্রসারণ কাজে ১ টাকা বিনিয়োগ থেকে দেশের লাভ হয় ৫৬ টাকা। অন্য দিকে, ব্রি ধানের জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় আয় এবং কর্মসংস্থানের উল্লেখযোগ্য প্রসার ঘটিয়েছে। দেশের যেসব এলাকায় ব্রি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় সেসব এলাকায় অন্য এলাকার চেয়ে দারিদ্র্য হার কম। আধুনিক সেচ সুবিধা বৃদ্ধি ও আধুনিক জাতের ধানের অধীনে জমির এলাকার সম্প্রসারণ ঘটেছে, সেই সাথে সার ব্যবসা, সেচপাম্প ও অন্যান্য কৃষি যন্ত্রপাতি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, ইত্যাদি কাজের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে কৃষি এবং অকৃষি খাতে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠির আয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে।
 
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার
ধান গবেষণা এবং ধানের জাত উদ্ভাবনে বিশেষ ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। ব্রি এ পর্যন্ত নিম্নের সারণিতে উল্লেখিত ২৬টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে:  
 
ক্রমিক নং
অর্জিত পুরস্কার
সাল
১।
জাতীয় পুরস্কার
১৯৭৪
২।
রাষ্ট্রপতি স্বর্ণ পদক
১৯৭৭
৩।
স্বাধীনতা দিবস স্বর্ণ পদক
১৯৭৮
৪।
রাষ্ট্রপতি স্বর্ণ পদক
১৯৮০
৫।
এফএও ব্রোঞ্জ ফলক
১৯৮০
৬।
রাষ্ট্রপতি স্বর্ণ পদক
১৯৮৪
৭।
বেগম জেবুন্নেসা ও কাজী মাহবুবুল্লাহ স্বর্ণ পদক
১৯৮৬
৮।
মুনিরুজ্জামান ফাউন্ডেশন স্বর্ণ পদক
১৯৯১
৯।
স্বাধীনতা দিবস স্বর্ণ পদক
১৯৯২
১০।
স্বাধীনতা দিবস স্বর্ণ পদক
১৯৯৭
১১।
ইরি (IRRI) সম্মানজনক ফলক
২০০৪
১২।
সেনাধীরা পুরস্কার (ইরি)
২০০৬
১৩।
৬ষ্ঠ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড
২০০৮
১৪।
বাংলাদেশ মানবধিকার কাউন্সিল, গাজীপুর কর্তৃক প্রদত্ত সম্মাননা
২০০৮
১৫।
জাতীয় পরিবেশ পদক
২০০৯
১৬।
মার্কেনটাইল ব্যাংক লিমিটেড পুরস্কার 
২০১৩
১৭।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) পুরস্কার
২০১৪
১৮।
কেআইবি কৃষি পদক-২০১৫
২০১৫
১৯।
জাতীয় কৃষি পুরস্কার-১৪২০
২০১৬
২০।
জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পুরস্কার (আইসিটি) ২০১৬
২০১৬
২১।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক এগ্রো এ্যাওয়ার্ড ২০১৭
২০১৭
২২।
বাংলাদেশ একাডেমি অব এগ্রিকালচার ২০১৮
২০১৮
২৩।
সেনাধীরা রাইচ রিসার্স পুরস্কার (ইরি)- ২০১৮
২০১৮
২৪।
আরটিভি কৃষি পদক ২০২১
২০২১
২৫।
জাতীয় কৃষি পুরস্কার-১৪২৪
২০২১
২৬।
একুশে পদক-২০২২
২০২২