Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৭ জুন ২০২১

খামার ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাফল্য

০১.ঠিকাদারের শ্রমিক ব্রি’র শ্রমিক অপেক্ষা দ্রুত কাজ করতে পারে, কিন্তু ব্রি’র শ্রমিকদের কাজের গুনগত মান ভাল। পরোক্ষ তত্বাবধান ও চূক্তিতে কাজ করালে তা দ্রুত সম্পন্ন হলেও পরোক্ষ তত্বাবধানে করানো কাজের গুনগত মান ভাল।

০২. ধান উৎপাদনের বিভিন্ন কার্যাদি সম্পাদনে ঠিকাদারের শ্রমিক থেকে ব্রি’র নিয়মিত শ্রমিকের অধিক সময় প্রয়োজন হয়। কিন্তু নিয়মিত শ্রমিকের ক্ষেত্রে কাজের গুনগত মান ভাল। বপন পদ্ধতিতে ধান চাষে অন্যান্য পদ্ধতি অপেক্ষা কম সময় লাগে।

০৩. ১৮ থেকে ৩২, ৩৩-৪৭ এবং ৪৮-৬২ বছরের  শ্রমিক গ্রুপের মধ্যে তুলনা করে দেখা যায়, ১৮ থেকে ৩২ বছর বয়সের শ্রমিকগন অধিক দক্ষ এবং ধান উৎপাদনের বিভিন্ন কার্যাদি সম্পাদনের জন্য সকাল ৬ টা থেকে সকাল ৮ টা ৪০ মিঃ পর্যন্ত সময় বেশী উপযোগী। মহিলা শ্রমিকগন নিড়ানী কাজে অধিক দক্ষ এবং পুরুষ শ্রমিকগণ শস্য কর্তন এবং মাড়াই কাজে পারদর্শী।

০৪. ১২ ঘন্টা ভিজানো এবং ১২ ঘন্টা জাগ দিয়ে কাদাময় জমিতে বীজ বপন করলে, এর চেয়ে কম/বেশী সময় জাগ দেয়ার চেয়ে বীজের ভাল অংকুরোদগমন হয়।এভাবে বীজ বপন করলে অধিকসংখ্যক ধানের চারা পাওয়া যায়। ফলে বীজ ধান পরিমাণে কম লাগে, ধান উৎপাদন খরচের সাশ্রয় হয় ও কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হন।

০৫. ধানের জমিতে শ্যাওলা দমনের জন্য হেক্টর প্রতি ১০ লিঃ পানিতে ১০০ গ্রাম কপার সালফেট মিশিয়ে ধান লাগানোর ২৫ দিন পর জমিতে প্রয়োগ করলে শ্যাওলা দমন করা যায় এবং ধান গাছের বৃদ্ধি ও ফলন ভাল হয়।

০৬. ধান রোপণে ৩৮ থেকে ৪৬ দিনের মধ্যে নিড়ি যন্ত্র ব্যবহার করলে, মানুষের দ্বারা ঘাস কাটার কারণে ফসণের কোন পার্থক্য হয় না, তাই পরিস্থিতি অনুযায়ী যন্ত্র বা শ্রমিক দ্বারা আগাছা দমন করা যায়।

০৭. ধান উৎপাদনে যদি জমিতে দানাদার ইউরিয়ার পরিবর্তে গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করা হয় তবে হেক্টর প্রতি ৪,০১৭/- টাকা লাভ হয়। হাত দিয়ে আগাছা দমন এবং উইডার মেশিন দিয়ে আগাছা দমনের পরিবর্তে আগাছানাশক রিফিট ব্যবহার করলে হেক্টর প্রতি যথাক্রমে ৬,১২৩/- টাকা এবং ২,৯৩৩/- টাকা লাভ হয়।

০৮. ধান লাগানোর ৩০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে ধান গাছের আগার দিক হতে ৪ থেকে ১০ সেঃ মিঃ কেটে ফেললে নেতিয়ে পড়ার প্রবনতা হ্রাস পায়। যে সমস্ত ধান গাছের বৃদ্ধি খুবই বেশি এবং নেতিয়ে পড়ার প্রবণতা থাকে সে ক্ষেত্রেই এই প্রযুক্তি প্রযোজ্য ।

০৯. ড্রাম সীডার দ্বারা বীজ বপন করলে রোপণ পদ্ধতির চেয়ে ধানের ফলন ৫- ৮% বেশী এবং ১০- ১৫% শ্রমিক কম লাগে। এছাড়াও উৎপাদন সময় কাল ৭- ১০ দিন কমে যায়।

 

১০. ধান লাগানো, আগাছা বাছাই, কর্তন ও মাডাই কাজে,  শ্রমিকদের ১০০%, ৮০%, ৬০%, ৪০% ও ২০% সমযে তদারকিতে দেখা যায, ১০০% তদারকীতে বিভিন্ন কাজে শ্রমিক সংখ্যা সব চেযে কম লাগে এবং এভাবে তদারকী যত কম করা হয. ততই শ্রমিক সংখ্যা বেশী লাগে এবং যখন কোন তদারকী করা হয না, তখন শ্রমিক সংখ্যা সবচেযে বেশী লাগে।  অর্থাৎ শ্রমিকের দক্ষতা বৃদ্ধি হলে সাথে সাথে তদারকীও বৃদ্ধি করা প্রযোজন।  

১১. ধান গাছে ফুল আসার ৩০-৩২ দিন পর ধান কর্তন করলে ভাল বীজ উৎপাদন করা সম্ভব। 

১২. ধান চাষে বেশি বয়সি চারার চেয়ে কম বয়সি চারা (১৫ থেকে ২০ দিনের চারা) রোপন করলে কুশির সংখ্যা, শীষের সংখ্যা ও প্রতি শীষে পুষ্ট ধানের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ফলে ধানের ফলনও উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পায়।

১৩. ধান গাছের পরিপক্ক পর্যায়ে পানি স্বল্পতা দেখা দিলে বীজের গুণগত মান হ্রাস পায় অর্থাৎ বীজের Germination Percentage (GM), Seedling Vigor Index (SVI), High Density Grain (HDG), Shoot Dry Weight (SDW), Root Dry Weight (RDW)উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যায়। এই সমস্ত ধান বীজ হিসেবে ব্যবহার না করাই উত্তম।

১৪. ব্রি, গাজীপুর খামারের গবেষণা মাঠসহ গাজীপুরের অধিকাংশ জমিতে জমি তৈরির জন্য ৪/৫টি চাষের প্রয়োজন নাই। একটি চাষের পর হাত দিয়ে আগাছা পরিষ্কার  অথবা আগাছানাশক ব্যবহার করে পরে একবার জমি চাষ করাই যথেষ্ট।

১৫.বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রস্তাবিত সার ব্যবস্থাপনার সাথে যদি ধানের দুধ অবস্থা(Milking stage) ও ডাফ অবস্থা(Dough stage) পর্যায়ে ৬০ গ্রাম এমওপি + ৬০ গ্রাম থিওভিট ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করা হয় তাহলে প্রায় ১৮% বেশি দাগমুক্ত দানা পাওয়া যায়।

১৬. ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে হেক্টর প্রতি ৩ থেকে ৪ টন জৈব সার প্রয়োগ যথেষ্ট নয়। আমাদেরকে জৈব সারের ডোজ বৃদ্ধি করতে হবে অথবা মিশ্রিত সার ব্যবস্থাপনা যেমন ব্রি কর্তৃক সুপারিশকৃত সারের ৫০% এর সাথে প্রতি হেক্টরে ৩ টন পল্ট্রি সার প্রয়োগ করে ধান উৎপাদন করলে মাটির গুনাগুনের পাশাপাশি ফলনও ভালো হবে।

১৭. আমন মওসুমে স্বল্প মেয়াদি ধানের জাতের ক্ষেত্রে ১৫ সে.মি.*১৫ সে.মি. ও ২০ সে.মি. * ১৫ সে.মি স্পেসিং দিয়ে ভালো ফলন পাওয়া গেছে। অন্যদিকে বোরো মওসুমে ২০ সে.মি. *২০ সে.মি স্পেসিং এ ধানের ভালো ফলন পাওয়া গেছে। অন্যদিকে উভয় মওসুমে প্রতি গুছিতে একটি থেকে তিনটি করে সতেজ চারা রোপন করলে কুশির সংখ্যা, শীষের সংখ্যা এবং প্রতি শীষে পুষ্ট ধানের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ফলে ধানের ফলন ও উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পায়।

১৮. আমন মওসুমে স্বল্প জীবন কাল সম্পন্ন ধানের জাতের ক্ষেত্রে ১৫ জুলাই থেকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ১৫ সে.মি.*১৫সে.মি অথবা ২০ সে.মি.* ১৫ সে.মি স্পেসিং দিয়ে চারা রোপন করলে অধিক ফলন পাওয়া যায় অন্যদিকে বোরো মওসুমে ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৬ জানুয়ারীর মধ্যে২০ সে.মি. * ১৫ সে.মি স্পেসিং দিয়ে চারা রোপন করলে ধানের ভালো ফলন পাওয়া যায়।

১৯. ধান উৎপাদনে গাজীপুর অঞ্চলে কৃষি খামার শ্রমিক মুজুরি প্রতি বছর ক্রমান্ময়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বছরের বিভিন্ন সময় শ্রমিক মুজুরির বিভিন্নতা লক্ষ্য করা যায় এবং বর্তমানে অর্থ্যাৎ ২০১৯-২০ অর্থ বছরে কৃষি খামার শ্রমিক মুজুরি গড়ে ৪৮৮-৫৪৩/- যা ২০০৭-০৮ অর্থ বছরে ছিল ২৩০-২৫৫/-